$400-এ পুরনো i7 গেমিং পিসি কেনা কি ভালো সিদ্ধান্ত?

$400-এ পুরনো i7 গেমিং পিসি কেনা কি ভালো সিদ্ধান্ত? বর্তমানে গেমিং কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে বাজেট গেমিং পিসির চাহিদা অনেক বেশি। অনেকেই মনে করেন, যদি মাত্র $400-এ একটি Intel Core i7, 16GB RAM, এবং RGB লাইটযুক্ত গেমিং কম্পিউটার পাওয়া যায়, তাহলে সেটি একটি অসাধারণ ডিল। কিন্তু আসলেই কি এটি লাভজনক বিনিয়োগ?

পুরনো হার্ডওয়্যারকে নতুন রূপ দিয়ে পুনরায় বিক্রি করার প্রবণতা (যাকে “Glam-furbishment” বলা হয়) দিন দিন বাড়ছে। অনেক বিক্রেতা পুরনো কম্পিউটারকে নতুন কেসিং, চটকদার RGB লাইট, এবং সামান্য আপগ্রেডের মাধ্যমে অত্যাধুনিক বলে উপস্থাপন করছে। কিন্তু এই ধরনের কম্পিউটার বাস্তবে নতুন গেম চালানোর জন্য কতটা উপযোগী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজকের বিস্তারিত বিশ্লেষণ।


 

Table of Contents

পুরনো i7 প্রসেসর: সত্যিই কি ভালো পারফরম্যান্স দেবে?

 

i7” নামটি শুনলেই অনেকে ধরে নেন এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং গেমিংয়ের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু প্রসেসর সম্পর্কে গভীরভাবে না জানলে সহজেই বিভ্রান্ত হওয়া সম্ভব।

 

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল “Generation vs Performance“। উদাহরণস্বরূপ:

Intel Core i7-2600S (2011 সালের প্রসেসর)

Intel Core i3-12100 (2022 সালের প্রসেসর)

প্রথমটি একটি পুরনো i7, যেখানে দ্বিতীয়টি একটি আধুনিক i3। আশ্চর্যের বিষয় হল, নতুন i3 অনেক ক্ষেত্রেই পুরনো i7-এর চেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে।

 

এ কারণেই শুধুমাত্র “i7” নাম দেখে কম্পিউটার কেনা উচিত নয়। প্রসেসরের জেনারেশন, ক্লক স্পিড, ক্যাশ মেমোরি, এবং ইন্সট্রাকশন সেট সমর্থন করা গুরুত্বপূর্ণ। পুরনো i7-2600S অনেক সফটওয়্যার ও গেমে ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারবে না কারণ এটি আধুনিক প্রযুক্তির সাথে মানানসই নয়।


 

পুরনো গেমিং কম্পিউটারের প্রধান সমস্যা

 

1️⃣ ধীরগতির প্রসেসর ও র‌্যাম

পুরনো পিসিগুলোর বড় সমস্যা হল তাদের CPU এবং RAM স্পিড অনেক কম। নতুন গেমগুলোর জন্য দ্রুতগতির প্রসেসর এবং উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির RAM অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।পুরনো কম্পিউটারে সাধারণত DDR3 র‌্যাম ব্যবহার করা হয়, যা বর্তমানে DDR4 এবং DDR5-এর তুলনায় অনেক ধীরগতির। ফলে, গেমিং পারফরম্যান্স

2️⃣ পুরনো হার্ডড্রাইভ (HDD) এবং ধীর লোডিং টাইম

এই ধরনের পিসিগুলোতে সাধারণত পুরনো HDD (Hard Disk Drive) ব্যবহার করা হয়, যা SSD-এর তুলনায় অত্যন্ত ধীরগতির। গেমের লোডিং টাইম দীর্ঘ হয়, উইন্ডোজ চালু হতে বেশি সময় লাগে, এবং সফটওয়্যার চালানোর সময় ল্যাগ দেখা যায়।

 

3️⃣ গ্রাফিক্স কার্ডের সীমাবদ্ধতা

একটি গেমিং কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল GPU (Graphics Processing Unit)। কিন্তু পুরনো গেমিং পিসিগুলোতে সাধারণত পুরনো GTX 900 বা 700 সিরিজের GPU থাকে, যা নতুন গেমগুলোর জন্য যথেষ্ট নয়। যেমন, GTX 970 গ্রাফিক্স কার্ডটির পারফরম্যান্স ভালো হলেও, এটি নতুন গেমগুলোর জন্য পর্যাপ্ত নয় কারণ এতে DirectX 12-এর সম্পূর্ণ সাপোর্ট নেই এবং নতুন ড্রাইভার আপডেট পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

 

4️⃣ USB 3.0 এবং M.2 SSD এর অনুপস্থিতি

পুরনো মাদারবোর্ডে USB 3.0 এবং M.2 SSD-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি অনুপস্থিত থাকতে পারে। ফলে দ্রুতগতির ডাটা ট্রান্সফার বা NVMe SSD ব্যবহার করা সম্ভব নয়, যা নতুন পিসির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সুবিধা।


Also Read : ৮ হাজার টাকায় তৈরি ফোন iPhone 8 – এক মাস পর ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা

 

বিকল্প হিসেবে কী করা উচিত?

 

✅ নতুন পার্টস দিয়ে বাজেট গেমিং পিসি বিল্ড করুন

আপনি যদি সত্যিই $400 বাজেটে ভালো গেমিং পারফরম্যান্স চান, তাহলে ব্যবহৃত (used) এবং নতুন (new) পার্টস মিশিয়ে একটি কাস্টম বিল্ড তৈরি করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

 

👉 উদাহরণস্বরূপ, Intel Core i3-12100 এবং GTX 970 ব্যবহার করে একটি গেমিং পিসি তৈরি করলে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।

👉 8GB DDR4 RAM ও 500GB SSD থাকলে গেমিং এবং মাল্টিটাস্কিং আরও স্মুথ হবে।

👉 নতুন পাওয়ার সাপ্লাই (PSU) ব্যবহার করলে সুরক্ষা বাড়বে এবং ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা সহজ হবে।

 

✅ ব্যবহৃত (Used) গেমিং কম্পিউটার কিনুন কিন্তু যাচাই করুন

 

যদি আপনি সত্যিই পুরনো গেমিং পিসি কিনতে চান, তাহলে অবশ্যই স্পেসিফিকেশন যাচাই করুন।

 

প্রসেসরের জেনারেশন এবং পারফরম্যান্স দেখুন

✔ গ্রাফিক্স কার্ডের ড্রাইভার সাপোর্ট রয়েছে কিনা পরীক্ষা করুন

✔ HDD না নিয়ে SSD থাকছে কিনা নিশ্চিত করুন

✔ কেনার আগে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করুন (Power-on Hours, Damage Test ইত্যাদি)


বেশি পারফরম্যান্সের জন্য অতিরিক্ত কিছু টিপস

বেশি পারফরম্যান্সের জন্য অতিরিক্ত কিছু টিপস

 

বাজেট বাড়ানো সম্ভব হলে Ryzen 5 5600G বা Intel i5-12400 ব্যবহার করুন।

✔ নতুন PSU কিনুন যাতে ভবিষ্যতে GPU আপগ্রেড করা যায়।

✔ Windows 11 এবং নতুন সফটওয়্যার সাপোর্ট নিশ্চিত করতে আধুনিক হার্ডওয়্যার বেছে নিন।

 

 

FAQ (সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন)

 

1. মাত্র $400-এ গেমিং পিসি কেনা কি সম্ভব?

হ্যাঁ, তবে নতুন ও ব্যবহৃত পার্টস মিশিয়ে কাস্টম পিসি বানানো ভালো হবে।

 

2. 10 বছরের পুরনো গেমিং পিসি কি ভালো কাজ করবে?

পুরনো গেম ভালোভাবে চলবে, তবে নতুন গেমগুলো ল্যাগ করবে এবং অনেক ক্ষেত্রে সাপোর্ট নাও পেতে পারেন।

 

3. পুরনো i7 বনাম নতুন i3, কোনটি ভালো?

একটি নতুন i3 (যেমন i3-12100) একটি পুরনো i7 (যেমন i7-2600S) থেকে অনেক ভালো পারফরম্যান্স দেবে।

 

4. গেমিং পিসির জন্য SSD কি অপরিহার্য?

হ্যাঁ, SSD না থাকলে গেমের লোডিং টাইম অনেক বেড়ে যাবে এবং পারফরম্যান্স খারাপ হবে।

 

5. RGB লাইট পারফরম্যান্স বাড়ায়?

না, RGB লাইট শুধুমাত্র লুকস উন্নত করে, কিন্তু গেমিং পারফরম্যান্সের কোনো পরিবর্তন আনে না।


 

শেষ কথা

 

$400 বাজেটে পুরনো গেমিং কম্পিউটার কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে চিন্তা করুন। শুধুমাত্র “i7” লেবেল দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়, বরং পা

রফরম্যান্স, আপগ্রেডের সুযোগ, এবং ভবিষ্যৎ সাপোর্ট বিবেচনা করুন।

আপনার অভিজ্ঞতা কেমন? কমেন্টে জানান!

 

Click Here Follow Us On Twitter

  

Leave a Comment