Samsung নতুন স্মার্টফোন কিনছেন 2025? এটি কি সত্যিই নতুন নাকি আগেই ব্যবহার করা হয়েছে?

আজকাল স্মার্টফোন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। ছোট থেকে বড়, সবাই এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। আমাদের দৈনন্দিন কাজের অঙ্গীকার করা এবং যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও স্মার্টফোনের ভূমিকা অপরিসীম। তাই, আমরা যখন একটি নতুন স্মার্টফোন কিনি, তখন আমরা চাই এটি সম্পূর্ণ নতুন, ফ্যাক্টরি সিলড, এবং কেউ যাতে এটি পূর্বে ব্যবহার না করে থাকে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, অনেক সময় এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেখানে আমরা যে ফোনটি কিনি, সেটি আসলে আগেই ব্যবহার করা হয়েছে। এমন ফোনও পাওয়া যায় যা ফ্যাক্টরি সিলড প্যাকেজে বিক্রি করা হয়, কিন্তু তার কিছু অংশ ইতোমধ্যেই ব্যবহৃত হয়েছে বা অ্যাক্টিভেট করা হয়েছে। তাই, নতুন স্মার্টফোন কেনার সময় আমাদের সতর্ক থাকা জরুরি।

এই আর্টিকেলে আমরা জানব কীভাবে আপনি সহজে বুঝবেন যে আপনি যে স্মার্টফোনটি কিনছেন, সেটি নতুন না পুরনো। কীভাবে ফোনের অ্যাক্টিভেশন স্ট্যাটাস চেক করবেন, এবং কীভাবে নিশ্চিত হবেন যে আপনি একটি নতুন ফোন কিনছেন।


 

Table of Contents

কেন এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ?

 

নতুন ফোন কেনার সময় এই বিষয়গুলি জানার কিছু কারণ রয়েছে:

 

1. ব্যাটারি এবং চার্জিং সাইকেল:

নতুন ফোনের ব্যাটারি সম্পূর্ণ নতুন থাকে, যা মানে এটি আগে কখনও চার্জ করা হয়নি। কিন্তু যদি ফোনটি আগে ব্যবহার করা হয়, তবে তার ব্যাটারি কিছুটা ব্যবহৃত হতে পারে, এবং এটি সঠিকভাবে চার্জ নাও নিতে পারে। ব্যাটারি সাইকেল দেখে আপনি বুঝতে পারবেন ফোনটি কতটা ব্যবহৃত।

 

2. ওয়ারেন্টি সমস্যা:

বেশিরভাগ স্মার্টফোনের কোম্পানি প্রথম অ্যাক্টিভেশনের তারিখ থেকেই তাদের ওয়ারেন্টি কাউন্ট করা শুরু করে। যদি আপনি একটি ফোন কিনে থাকেন যেটি আগে ব্যবহার করা হয়েছে, তবে আপনার ওয়ারেন্টি সময়কাল কমে যাবে।

 

3. মূল্য:

নতুন ফোনের দাম সাধারণত বেশি হয়। কিন্তু যদি একটি ফোন আগেই ব্যবহার করা হয়েছে, তাহলে তার মূল্য কম হওয়া উচিত। যদি আপনি একটি ব্যবহৃত ফোনের দাম নতুন ফোনের সমান দামে কিনে থাকেন, তবে আপনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

 

4. বিশ্বাসযোগ্যতা:

আপনি যেখান থেকে ফোনটি কিনছেন, সেই দোকান বা বিক্রেতার বিশ্বাসযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। যদি ফোনটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে আপনার দোকান বা বিক্রেতার কাছে এটি ফেরত দেওয়ার বা রিপ্লেস করার সুযোগ থাকবে কিনা, সেটিও যাচাই করতে হবে।


কীভাবে বুঝবেন আপনার ফোন নতুন নাকি পূর্বে চালু করা হয়েছে?

 

নতুন স্মার্টফোন কেনার সময় আপনি যে উপায়গুলি ব্যবহার করতে পারেন তা ব্যাখ্যা করা হলো। আমরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য নির্দিষ্ট কিছু চেকিং পদ্ধতি আলোচনা করবো। এই পদ্ধতিগুলি আপনাকে নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে যে আপনি যে ফোনটি কিনছেন, সেটি নতুন এবং কোনও পূর্ববর্তী ব্যবহার নেই।


 

১. Samsung ফোন চেক করার উপায়

 

Samsung ফোনের ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভেশন স্ট্যাটাস চেক করা খুব সহজ। আপনার ফোনের Device Info অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি সহজেই জানতে পারবেন ফোনটি নতুন নাকি ব্যবহৃত।

ধাপ ১: “Device Info” অ্যাপ ইন্সটল করুন

1. Google Play Store-এ যান।

2. সার্চ বক্সে “Device Info” টাইপ করুন।

3. উপযুক্ত অ্যাপটি ইনস্টল করুন।

4. অ্যাপটি খুলে “Device” অপশনে যান।

ধাপ ২: ডিভাইসের বয়স চেক করুন

 

1. অ্যাপে “Device Age” নামে একটি অপশন খুঁজুন।

2. এখানে ফোনটির প্রথম অ্যাক্টিভেশনের তারিখ দেখানো হবে।

3. যদি এটি দেখায় “1 বছর, 1 মাস, 21 দিন”, তাহলে বুঝবেন ফোনটি আগে ব্যবহার করা হয়েছে।

4. নতুন ফোনের ক্ষেত্রে এটি “0 দিন” দেখানো উচিত।

 

অতিরিক্ত টিপস:

 

• Samsung-এর ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকরী পদ্ধতি, তবে কিছু পুরোনো মডেলের জন্য এটি কাজ নাও করতে পারে।

• আপনি *#12580*#369# ডায়াল করেও ফোনের হার্ডওয়্যার তথ্য পেতে পারেন, যা আপনাকে একটি ধারণা দিতে পারে যে ফোনটি নতুন নাকি ব্যবহৃত।



Vivo phone image
২. Vivo এবং iQOO ফোন চেক করার উপায়

 

Vivo এবং iQOO ফোনের ক্ষেত্রে কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অ্যাক্টিভেশন তথ্য বের করা সম্ভব।

ধাপ ১: “vivo.com” অ্যাপে যান

 

1. Google Chrome বা অন্য কোনও ব্রাউজারে vivo.com ওয়েবসাইট খুলুন।

2. এখানে Warranty Activation Status চেক করার একটি অপশন থাকবে।

 

ধাপ ২: IMEI নম্বর দিয়ে যাচাই করুন

 

1. ফোনের ডায়ালারে যান।

2. *#06# টাইপ করুন এবং IMEI নম্বর পান।

3. এই IMEI নম্বর vivo.com ওয়েবসাইটে প্রবেশ করান।

4. এটি দেখাবে ফোনের Activation Date।

 

অতিরিক্ত টিপস:

 

• যদি ফোনটি নতুন হয়, তাহলে এখানে কোনও Activation Date দেখাবে না।

• তবে, কিছু ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ১০০% নির্ভরযোগ্য নয়, কারণ কিছু ফোনে প্রথম সিম প্রবেশের পরই তথ্য আপডেট হয়।


  Also Read : iPad 10th Gen ২০২৫ সালে কেনা উচিত কি না?


৩. OnePlus ফোন চেক করার উপায়

OnePlus ফোনের জন্য একটি নির্দিষ্ট অনলাইন টুল রয়েছে যা IMEI নম্বর দিয়ে ফোনের Activation Date চেক করতে সাহায্য করে।

ধাপ ১: OnePlus Activation Check ওয়েবসাইটে যান

 

1. গুগলে “OnePlus Activation Check” লিখে সার্চ করুন।

2. প্রথমে যে ওয়েবসাইট আসবে, সেটিতে যান।

 

ধাপ ২: IMEI নম্বর প্রবেশ করান

 

1. ফোনের *#06# ডায়াল করে IMEI নম্বর নিন।

2. ওয়েবসাইটে এটি প্রবেশ করান এবং “Check” বাটনে ক্লিক করুন।

3. এটি দেখাবে ফোনটির প্রথম অ্যাক্টিভেশনের তারিখ।


৪. Oppo এবং Realme ফোন চেক করার উপায়

 

Oppo এবং OnePlus একই কোম্পানির হওয়ায় তাদের ফোনের IMEI চেকিং পদ্ধতি একই রকম।

ধাপ ১: Oppo IMEI চেক ওয়েবসাইটে যান

 

1. গুগলে “Oppo Activation Check” লিখে সার্চ করুন।

2. প্রথম লিঙ্কে যান।

 

ধাপ ২: IMEI নম্বর দিয়ে যাচাই করুন

 

1. ফোনের *#06# ডায়াল করুন।

2. IMEI নম্বর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করান এবং চেক করুন।

 

Realme ফোনের সমস্যা:

 

• Realme ফোনের ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভেশন চেক করা কঠিন, কারণ বাংলাদেশে কিছু ডিভাইস একবার চালু হওয়ার পর এক সপ্তাহ পর লক হয়ে যায়।

• ভারতের ভ্যারিয়েন্ট ফোন হলে এমন সমস্যা কম হয়।


৫. ফোনের ফ্যাক্টরি সিল চেক করা

 

নতুন ফোন কিনতে গেলে প্যাকেজিং ভালোভাবে খেয়াল করুন। ফ্যাক্টরি সিল একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, যা আপনাকে ফোনের আসল অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়।

• ফ্যাক্টরি সিল সাধারণত পাতলা এবং শক্তিশালী হয়।

• বাংলাদেশে পুনরায় সিল করা ফোনের সিল বেশি টাইট থাকে।

• Vivo এবং iQOO-এর দামি ফোনে কোম্পানির একটি আলাদা স্টিকার থাকে, যা রি-প্যাক করা ফোনে থাকে না।


শেষ কথা

 

নতুন স্মার্টফোন কেনার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

 

IMEI নম্বর যাচাই করুন।

✅ Device Activation Status চেক করুন।

✅ ফ্যাক্টরি সিল পর্যবেক্ষণ করুন।

✅ চার্জিং পোর্ট ও স্ক্রিন পরীক্ষা করুন।

 

যদি আপনি উপরের পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করেন, তাহলে আপনি সহজেই জানাতে পারবেন আপনার ফোনটি নতুন কিনা। আপনি যদি কিছু শেয়ার করতে চান বা আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চান, তবে মন্তব্য করতে ভুলবেন না।

 

Click Here Follow Us On Twitter

 

 

 

Leave a Comment